Skip to main content
 

আমাদের কথা

আমাদের কথা

ইতিহাস ও ঐতিহ‌্য সমৃদ্ব ভাওয়াল পরগনা কালক্রমে গাজীপুর জেলা হিসাবে প্রশাসনিক ভাবে আত্মপ্রকাশ লাভ করে। রাজকুমার রামেন্দ্র নারায়ন প্রকাশ ভাওয়াল রাজা সন্ন্যাসীর জীবনাবসান ও প্রত্যাবর্তন কে কেন্দ্র করে যে রহস্যবৃত কিংবদন্তী তা যেন কল্পলোকের কাহিনী। রাজকুমার নারায়ন ঢাকা জজ কোর্র্টে মামলা করেন যা সমগ্র ভারতবর্ষে ভাওয়াল সন্ন্যাসী মামলা নামে খ্যাতি লাভ করে। বিচারক পান্নালাল বসুর ঐতিহাসিক রায় কলকাতা হাইকোর্ট হয়ে প্রিভি কাউন্সিলে বহাল থাকে। কালক্রমে 1978 সালের 18 ডিসেম্বর গাজীপুর মহকুমার উন্নীত হয়। 1984 সালের ১লা মার্চ গাজীপুর জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সর্র প্রথম জুলাই 1982 খ্রিস্টাব্দে পাঁচটি উপজেলা আদালত ও একটি থানা আদালত (টংগী) নিয়ে গাজীপুর জেলায় মুন্সেফ আদালত গঠিত হয়। পরবর্তীতে 17/12/1984  খ্রিস্টাব্দে জেলা আদালত সৃজিত হয়। ১৫/০১/১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম জেলা জজ হিসেবে জনাব মো: আব্দুর রশিদ যোগদান করেন। তিনি একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ও একজন সাব-জজ নিয়ে বিচারিক কায্ক্রম শুরু করেন। বর্তমানে গাজীপুর জজশীপে দুজন সহকারী জজ, চারজন সিনিয়র জজ, তিনজন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, চারজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং গাজীপুর জেলা জজ আদালত এর কাযক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। অসহায় ও অস্বচ্ছল বিচারপ্রার্থী জনগন এর জন্য গাজীপুর জেলা লিগ্যাল এইড অফিস কাযকর ভূমিকা পালন করছে।

২০০৩ খিস্ট্রাব্দে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার পর হতে একজন জেলা জজ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে বিচারকাজ পরিচালনা করে আসছেন। উক্ত ট্রাইব্যুনাল শিশু আদালত হিসেবেও কাজ করছেন।

বিচার বিভাগ পৃথকীকারণের যাত্রালগ্নে ০১ নভেম্বর ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে গাজীপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চালু হয়। বর্তমানে একটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, একটি অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চারটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পাঁচটি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও একটি কিশোর অপরাধ আদালতের ১২টি আদালত নিয়ে গঠিত গাজীপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিবিড়ভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করে আসছে।

বিগত ৩০/১২/২০১৯ খ্রিস্টাব্দের সরকারি প্রজ্ঞাপন মূলে গাজীপুর চীফ মেট্রো-পলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সকল পদ সৃজিত হয়েছে। গাজীপুর মহানগর এলাকা স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্ধারিত হওয়ার প্রেক্ষিতে বিগত ১৫/০৭/২০২১খ্রিস্টাব্দে চীফ মেট্রো-পলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে একজন চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটসহ একজন অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসী বিচারকাজ পরিচালনা করে আসছে।

হাজার বছরের শতত বহমান ইতিহাস, ঐতিহ‌্য ও প্রত্নতত্ত্বে সমৃদ্ধ এই ভাওয়াল জনপদ। এ জনপদ থেকে উদ্ভৃত ভাওয়াল রাজ সন্ন্যাসী মামলা ও তার প্রেক্ষাপট ভারত বর্ষের গন্ডি পেরিয়ে আলোড়িত হয়েছে বিলেতের প্রিভি কাউন্সিল পযন্ত । মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে ১৯৭১ সালের ১৭ই মার্চ গাজীপুরের মুক্তিকামী বীরযোদ্ধার প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। গাজীপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্যের সাথে গাজীপুরের বিচার বিভাগের রয়েছে এক নিবিড় ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। বার-বেঞ্চের সৌহাদ্যপূর্ণ ও সন্মানজনক সম্পর্ক বিচারপ্রার্থী মানুষের বিচার প্রাপ্তির পথকে করেছে নির্বিঘ্ন ও নিষ্কলুষ। গাজীপুরের বিচার বিভাগ বিচারপ্রার্থী জনগনের বিচার নিশ্চিত করতে গ্রহন করেছে বহুমাত্রিক উদ্ভাবনী পদক্ষেপ। সুযোগ্য নেতৃত্ব, নিরলস প্রচেষ্টা ও নির্মোহ আত্নত্যাগে গাজীপুর বিচার বিভাগ নিরন্তর কাজ করে এক অনুকরণীয় বিচারিক ঐতিহ‌্য সৃষ্টি করেছে।